প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম । প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

প্রত্যয়ন পত্র হল একটি মানুষের জন্য কোন নির্দিষ্ট সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক সত্যায়িত কপি। একজন মানুষের সম্পর্কে তার বৈশিষ্ট্য, আচার-আচরণ বা বিভিন্ন সম্পর্কগুলোকে প্রভাবিত করে প্রত্যায়ন পত্র।

প্রত্যয়ন পত্র
প্রত্যয়ন পত্র

 

প্রত্যয়ন পত্র একজন মানুষকে তার সম্পর্কে স্বত্ত্বায়ন দেয়া হয়, সেখানে তার সম্পর্কে তার বৈশিষ্ট্য উল্লেখ পূর্বক সুপারিশ করা হয়। আর প্রত্যায়ন পত্র অনেক ব্যবহার রয়েছে। প্রত্যয়ন পত্র কোথা থেকে সংগ্রহ করা যাবে? প্রত্যয়ন পত্র কিভাবে লিখবো , প্রত্যয়ন পত্র আবেদন প্রক্রিয়া এবং প্রত্যয়ন পত্র কি কাজে লাগে  প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

 

প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

আমাদের অনেক কাজে প্রত্যয়ন পত্র জরুরি হয়ে পড়ে। এটি পেতে বেশিরভাগ সময় অনেক ঝামেলাও সময় অপচয় সহ নানা অসুবিধায় পড়তে হয়। অনেক সময় চেয়ারম্যান বা কমিশনার ব্যস্ত থাকার কারণে প্রত্যয় পত্র হাতে পেতে অনেক দেরি হয়ে যায়। আবার প্রত্যয়ন পত্র টি হাতে পেতে পেতে দরকারি কাজের সময় শেষ হয়ে যায়। তাই কিভাবে এত ঝামেলা এড়িয়ে অনলাইনে প্রত্যয়ন পত্র আবেদন করবেন এবং অতি দ্রুত হাতে পাবেন তা নিচে তুলে ধরা হলো।

প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন করতে হলে সরকারি ওয়েবসাইট https://prottoyon.gov.bd/ তে প্রবেশ করতে হবে। তারপরে আপনার প্রত্যয়ন পত্রের ধরন বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ গুলো অবলম্বন করতে হবে। নিচে ভিডিওটি তুলে ধরা হলোঃ

প্রত্যয়ন পত্র কত প্রকার?

প্রত্যয়ন পত্রের অনেক ধরন থাকে। এর ভিতর আপনার আপনার দরকারি প্রত্যয়নটি নির্বাচন করে নিবেন।

  • উত্তরাধিকার সনদ
  • মৃত্যু সনদ
  •  জাতীয়তা সনদ
  • ভুমিহীন সনদপত্র
  • চারিত্রিক সনদ
  • উপজাতি সনদ
  •  মুক্তিযোদ্ধা সনদ
  • এতিম সনদ
  • বিবাহিত সনদ
  •  অবিবাহিত সনদ
  • বেকারত্ব সনদ
  • পুনঃর্বিবাহ সনদ

প্রত্যেকটা প্রত্যয়ন সনদ এর আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, আর প্রত্যেকটা প্রত্যয়ন পত্র একই গঠনের তৈরি হয়। প্রত্যয়ন পত্র আলাদা ব্যক্তি কর্তৃক সত্যায়ন হতে পারে, আবার বেশিরভাগ প্রত্যায়ন কোন নির্দিষ্ট এরিয়ার সত্তা কর্তৃক সত্যায়িত হতে পারে। যেমনঃ

চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রত্যয়ন পত্র
  • চারিত্রিক সনদ
  • বিবাহিত সনদ
  • অবিবাহিত সনদ
  • বেকারত্ব সনদ
  • পুনঃ বিবাহ সনদ
  • ভূমিহীন সনদ
  • চারিত্রিক সনদ
  • উপবৃত্তি সনদ
  • আর্থিক সহযোগিতা সনদ

 

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম । প্রত্যয়ন পত্র কিভাবে লিখবো

প্রত্যয়ন পত্রের ধরন বাছাই করে আপনাকে প্রত্যয়ন পত্র লিখতে হবে, প্রত্যয়ন পত্রে স্মারক নম্বর এবং তারিক ও তার সাথে প্রত্যয়ন পত্র উল্লেখপূর্বক বর্ণনা লিখতে হবে । সর্বশেষে নিচে ব্যাক্তি কতৃক সত্বায়িত সাক্ষর থাকা বাধতামুলক। এভাবেই প্রত্যয়ন পত্র লেখা সম্ভব।

স্কুল কলেজ থেকে প্রত্যয়ন পত্র চেয়ে আবেদন

স্কুল কলেজ থেকে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন পত্র নমুনা নিম্নের ধরনের হয়ঃ

তারিখঃ……………………

বরাবর,

অধ্যক্ষ

সরকারী ব্রজমোহন কলেজ,

বরিশাল ।

বিষয়ঃ প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

জনাব,

বিনীত নিবেদন এই যে, আমি মোঃ…………, পিতাঃ……………. মাতাঃ…………. , গ্রামঃ………….., ডাকঘরঃ…………., থানাঃ…………., জেলাঃ………….  । আমি আপনাদের প্রতিষ্ঠানের অনার্স ৩য় বর্ষের একজন নিয়মিত ছাত্র, রোলঃ…………, শিক্ষাবর্ষঃ ২০১৮-২০১৯, আমি পাসপোর্ট বের করিতে ইচ্ছুক । এমতাবস্থায় পাসপোর্ট অফিসের কতৃপক্ষ আমার নিকট একটি প্রত্যয়ন পত্র চেয়েছে । উক্ত কারনে আমার একখানা প্রত্যয়ন পত্র দরকার ।

অতএব, জনাবের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমি যাহাতে একখানা প্রত্যয়ন পত্র পাইতে পারি তাহার সু-ব্যবস্থা করতে আপনার মর্জি হয় ।

বিনীত নিবেদক

(ক)

 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রত্যয়ন পত্র

সাধারনত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্র দিয়ে থাকে প্রধান শিক্ষক। তো প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়ন পত্র নমুনা হলো

স্মারক নং- প্র.পি.কা/

তারিখঃ ১২/৩/১৪২

প্রত্যয়ন পত্র

এতদ্বারা প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, নাম………….., পিতাঃ…………… মাতাঃ…………….., গ্রামঃ…………….., ডাকঘর…………….. উপজেলাঃ……………, জেলাঃ…………..। সে ২০** ইং সালে অত্র প্রতিষ্ঠানেরঃ ……………..  শ্রেণির ছাত্র/ছাত্রী ছিল এবং ২০** ইং সালের বার্ষিক পরীক্ষা/ এসএসসি/এইসএসসি অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সহিত উত্তীর্ণ হয়। সে বিদ্যালয়ের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করেছে। আমি যতদূর জানি তার চরিত্র ভাল। ভর্তি বহির বর্ণনানুযায়ী তার জন্ম তারিখ ০১/০১/২০০০ ইং।

বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে সে কোনো প্রকার নিয়ম শৃংখলা পরিপন্থী কাজে জড়িত ছিল নাআমি তার ভবিষ্যৎ জীবনের সাফল্য কামনা করি।

প্রধান শিক্ষক……….

[ক] উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা।

 

সরকারি চাকরির প্রত্যয়ন পত্র

একজন ব্যক্তি যখন সরকারি চাকরি করে তখন প্রায় প্রত্যয়ন পত্রের দরকার হয়। আর সরকারি চাকরির প্রত্যয়ন পত্র দপ্তর প্রধানের থেকে সংগ্রহ করতে হয়। চাকরির প্রত্যয়ন পত্রের নমুনাঃ

গনপ্রজানতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

ডাক বিভাগ, ঢাকা

স্মারক নংঃ    তারিখঃ

প্রত্যয়ন পত্র

এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে নাম………….., পিতাঃ…………… মাতাঃ…………….., গ্রামঃ…………….., ডাকঘর…………….. উপজেলাঃ……………, জেলাঃ…………..। তিনি বিগত দুই বছর ধরে অত্র প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারি হিসেবে কর্মরত আছেন।  আমার জানা মনে তিনি তার দায়ীত্ব ও কর্তব্য অত্যন্ত নিষ্টা, সততা ও দক্ষতার সাহিত পালন করে আসছে। তার স্বভাব চরিত্র ভালো।

আমি তাহার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।

সাক্ষর……….

প্রধান প্রকৌশলি,

বাংলাদেশ ডাক বিভাগ।

 

চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্রঃ

উক্ত প্রত্যয়ন পত্র দরকার পড়ে সাধারনত কোন চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ প্রকাশ করতে। যেমন টা কোন চাকরিতে নিয়োগদানের পূর্বে।

চেয়ারম্যান কার্যালয়

১১ নং ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ

ডুমুরিয়া, খুলনা।

স্মারক নংঃ    তারিখঃ

প্রত্যয়ন পত্র

এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাইতেছে যে, নাম………….., পিতাঃ…………… মাতাঃ…………….., গ্রামঃ…………….., ডাকঘর…………….. উপজেলাঃ……………, জেলাঃ…………..। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি ও জানি। সে জন্মসূত্রে অত্র ইউনিয়নের একজন স্থায়ী বাসিন্দা এবং তার স্বভাব, চরিত্র ভালো। আমার জানা মতে সে সমাজ বা রাষ্ট্রবিরোধী কোন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নহে।

আমি তার সার্বিক উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করি।

চেয়্যার ম্যান………..

ডুমরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ।

 

প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে শেষ কথাঃ

প্রত্যয়ন পত্র আপনি খুব সহযে আপনার ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র থেকে তৈরি করে নিতে পারবেন তাছাড়া আপনি এই পোস্টের লেখার নিয়ম অনুযায়ী আপনার পরিচিত অথবা নিজস্ন কম্পিউটারে Microsoft Word দিয়ে সহযেই লিখতে পারবেন৷ মনে রাখবেন অপ্রয়জনীয় কাজে প্রত্যয়ন পত্রের ব্যয়বহার করবেন না। এতে আপনাকে সুপারিশ করা ব্যাক্তির মানহানি হতে পারে। অবশ্যই পোস্ট টি শেয়ার করে দিবেন বন্ধুদের মাঝে।

Similar Posts

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *