কানাডা ভিসা আবেদন করার নিয়ম
আপনি কানাডায় যেতে ইচ্ছুক? কিভাবে কানাডা ভিসা আবেদন করবেন ও কি কি ডকুমেন্টস লাগে – জেনে নিন এই পোস্টে।
বিশ্বের সুন্দরতম এবং উন্নত দেশগুলোর একটি কানাডা। প্রতিবছর কানাডায় প্রায় তিন লক্ষ দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। ওয়ার্ক ভিসা পেতে সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা HSC পাস (জিপিএ- ৪.০০) এবং ইংরেজি দক্ষতার জন্য IELTS স্কোর ভালো থাকতে হবে। তারপর কানাডা ভিসা আবেদন, ভিসা ফি ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রদান করে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।
এই পোস্টের সার সংক্ষেপ
কানাডা ভিসার ধরন – কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি
কানাডাতে বিভিন্ন ধরনের ভিসায় যাওয়া যায়। যেমন-
ওয়ার্ক পারমিট ও অভিবাসী
এ ধরনের ভিসায় সরাসরি কাজের জন্য আবেদন করে বিভিন্ন এন্ট্রি প্রোগ্রামে কানাডা যেতে পারবেন। বর্তমানে-
- রুরাল ও নর্দান ইমিগ্রেশন পাইলট প্রোগ্রাম
- এক্সপ্রেস এন্ট্রি প্রোগ্রাম
- LIMA ওয়ার্ক ভিসা
- প্রাদেশিক মনোনীত স্পন্সরশিপ (PNP)
- ইনভেস্টমেন্ট ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম
- ফ্যামিলি ক্লাস স্পন্সরশিপ
এই ধরনের প্রোগ্রামগুলোতে অথবা সরাসরি কোন নিয়োগকারী কোম্পানির ওয়েবসাইটে কানাডা ভিসা আবেদন করে কাজের জন্য যাওয়া যায়।
ভিজিট ভিসা
৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদে কানাডা ভ্রমণের জন্য যাওয়া যায়। এছাড়াও
- সিঙ্গেল এন্ট্রি (একবার ভ্রমণ করা যায়)
- মাল্টিপল এন্ট্রি (একই ভিসার আওতায় অনেকবার ভ্রমণ করা যায়)
- এ দুই ধরনের ভিজিট ভিসায় যেতে পারবেন।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা
দুইভাবে কানাডা স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়া যায়-
- কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করে।
- স্কলারশিপের মাধ্যমে।
- এছাড়াও মেডিকেল ভিসায় কানাডা যেতে পারবেন।
কানাডা ভিসা আবেদন করার নিয়ম
বাংলাদেশের জন্য কানাডার ই-ভিসা চালু নেই। তাই শুধুমাত্র অনলাইনে আবেদন করে সরাসরি কানাডা ভিসা পাওয়া যায় না। তার জন্য বাংলাদেশের কানাডিয়ান এম্বাসি অথবা অনুমোদিত এজেন্সি থেকে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।
জানুনঃ সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার নিয়ম
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
দক্ষ জনশক্তি হিসেবে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় আবেদনের সময় নির্দিষ্ট কোন কাজে কমপক্ষে ১ বছরের অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিয়ে বিএমইটির কার্যালয়ে অথবা উপরোক্ত এন্ট্রি প্রোগ্রাম গুলোর মাধ্যমে আবেদন করে কানাডিয়ান এম্বাসি থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।
(১) কানাডিয়ান চাকরির ওয়েবসাইটে আবেদন
- ধাপ ১: কানাডার সরকারি ওয়েবসাইটে www.jobbank.gc.ca এই লিংকে ভিজিট করুন।
- ধাপ ২: আপনি কোন ধরনের ভিসা পেতে চান- ওয়ার্ড পারমিট ভিসা, অভিবাসী, বিজনেস ভিসা নাকি অন্য কোন ভিসা সিলেক্ট করুন।
- ধাপ ৩: এবার ‘Find a job’ অপশনে প্রবেশ করে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরিতে আবেদন করে এম্বাসির মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।
(২) বিএমইটি কার্যালয় থেকে আবেদন
বর্তমানে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বাংলাদেশ থেকে কোন দেশেই যাওয়া যায় না। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে সরাসরি বিএমইটি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কানাডা ভিসা আবেদন করুন।
অথবা, সরকার অনুমোদিত ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে রেজিস্টার করে কানাডার কাজে আবেদন করুন। আবেদন গ্রহণ করা হলে এম্বাসির মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।
(৩) কানাডিয়ান এম্বাসি থেকে
- প্রথমে, www.canada.ca ওয়েবসাইটে কানাডার বিভিন্ন এন্ট্রি প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে।
- আবেদনের কপি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে সরাসরি কানাডিয়ান এম্বাসি বা কনস্যুলেটে উপস্থিত হতে হবে।
- এবার সেখানে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি প্রদান করুন।
- কানাডার ভিসা ফি পরিশোধ করুন।
- ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হলে এম্বাসির মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।
কানাডা ভিজিট ভিসা আবেদন
ভিজিট ভিসার জন্য কোন অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সি অথবা সরাসরি কানাডিয়ান কনস্যুলেটে আবেদন করুন। তারপর, ভিসা ফি পরিশোধ করে ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হলে কানাডায় ভ্রমনে যেতে পারবেন।
কানাডা ভিসা পেতে কি কি লাগে
ওয়ার্ক পারমিট/অভিবাসী ভিসা পেতে এবং ভিজিটের জন্য কানাডা ভিসা আবেদন করতে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়। যেমন-
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কি কি লাগে
অনলাইনে কানাডা ভিসার আবেদন।
- ভেলিডিটি সম্পন্ন পাসপোর্ট।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।
- ন্যূনতম HSC পাস।
- ইংরেজি দক্ষতার জন্য IELTS এ ভালো স্কোর।
- বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন।
- ভিসা প্রসেসিং ফি প্রদানের প্রমাণপত্র।
- মেডিকেল রিপোর্ট।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- ভ্যাকসিনেশন কার্ড।
- পেশাদার যোগ্যতা ও কানাডা আপনার মাধ্যমে কিভাবে উপকৃত হতে পারে তা উল্লেখ। নির্দিষ্ট কোন কাজে কমপক্ষে ১ বছরের অভিজ্ঞতা।
- বাংলাদেশী কানাডিয়ান কনস্যুলেটে উপস্থিত হয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, রেটিনা স্ক্যান ও ছবি প্রদান করতে হবে।
আর্থিক উৎসের প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট। কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স।
ভিজিট ভিসা পেতে কি কি লাগে
- ৬ মাস মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট।
- পুরনো পাসপোর্ট থাকলে তা প্রয়োজন হবে।
- পূর্বে কানাডা ভ্রমণ করলে সেই ভিসার কপি।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- ভ্যাকসিনেশন কার্ড।
- কানাডা ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় অর্থের উৎস হিসেবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে ভিজিটিং কার্ডের কপি।
- ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি।
- কোন কানাডিয়ান অভিবাসীর আমন্ত্রনে গেলে রেফারেন্স লেটার।
উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলো নিয়ে কানাডা ভিসা আবেদন করতে পারবেন।
কানাডা ভিসা খরচ
কানাডা ভিসা খরস নির্ভর করে মূলত ভিসার ধরনের উপর। যেমন স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ রিকোয়ারমেন্ট সহ ৫ লক্ষ টাকার উপরে, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে ১০+ লক্ষ টাকার মতন, এবং কানাডার টুরিস্ট ভিসের ক্ষেত্রে ৩-৪ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। প্রয়োজন ভেদে কানাডা ভিসা খরচ কম বা বেশি হতে পারে।
কানাডা ভিসা সংক্রান্ত তথ্য যোগাযোগ
কানাডিয়ান হাই কমিশন, বাংলাদেশ (জাতিসংঘ সড়ক, বারিধারা, ঢাকা ১২১২),সরাসরি যোগাযোগ অথবা,
ইমেইল করুন- dhaka@international.gc.ca।
হটলাইন নম্বর- 02-55668444