জমি রেজিস্ট্রেশনে প্রতারণা এড়াতে করণীয়
জমি কেনার সময় প্রতারণার শিকার হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে খুবই সাধারণ। জমি কেনার পর দেখা যায় বিক্রেতা ছিল ভুয়া, আর এই প্রতারণার ফলে জমির মালিকানা হারানো, অতিরিক্ত অর্থ প্রদান, জমিতে অন্যের দাবি দাওয়া উঠা, ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
জমি ক্রয় করার মধ্যে অন্যতম ধাপ হল জমি রেজিস্ট্রি। এই রেজিস্ট্রার মাধ্যমে জমির দখল কিংবা মালিকানা পরিবর্তন করে নিজের নামে করে নিতে হয়। কিন্তু কিছু অসাবধানতার কারণে আপনি প্রতারণার শিকার হতে পারেন, এবং খুয়ে ফেলতে পারেন আপনার সর্বস্ব। আর তাই জমি রেজিস্ট্রেশনে প্রতারণা এড়াতে আপনার যা যা করণীয় আলোচনা করা হলো।
জমি রেজিস্ট্রেশনে প্রতারণা এড়াতে করণীয়
- জমি নিষ্কণ্টক কি না তা কেনার আগে যাচাই করে নিবেন
- জমি নির্ভেজাল কি না তা বুঝতে জমির দলিল ভালোভাবে যাচাই করুন, (জমির দলিল যদি পুরনো হয় তাহলে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে জমির দলিল তল্লাশি করতে পারেন)
- দলিলে জমির সঠিক অবস্থান, আয়তন, মালিকানা, দাম, ইত্যাদি তথ্য সঠিকভাবে আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
- দলিলটি সঠিকভাবে টাইপ করা এবং স্বাক্ষর করা হয়েছে কিনা তাও দেখে নিন।
- জমির বর্তমান মালিকের নামজারি, পর্চা, খাজনা রসিদ, ইত্যাদি যাচাই করুন। এগুলো থেকে জমির বর্তমান মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে জমির নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান এবং পর্চা অনুসন্ধান করা যায়। অনলাইন ব্যতীত আপনি সরাসরি ভূমি অফিসে এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে যেতে পারেন।
- জমির উপর অন্য কারো কোনো দাবি আছে কিনা তা খোঁজ নিন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একজনের জমি অন্য জন্য দখল করে ভোগ করে, এবং ভুয়া দলিল দেখিয়ে আপনার কাছে হয়তো সেই জমি বিক্রি করতে চাচ্ছে। সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দলিলের তথ্য অনুসন্ধান করলেই জমির আসল মালিকানা খুঁজে বের করতে পারবেন।
- জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন। তিনি আপনাকে জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে এবং প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করতে পারবেন।
জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে হলে, প্রথমে বর্তমান মালিকের দলিল এবং খাজনা হালনাগাদ যাচাই করতে হবে। এরপর, হস্তান্তরের পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। জমি দুইভাবে হস্তান্তর করা যায়: হেবা বা সাফ কবলা। যে পদ্ধতিতেই হস্তান্তর করা হোক না কেন, মালিকানা নিশ্চিত করতে অবশ্যই উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।
জমি রেজিস্ট্রেশনের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন
- জমি কেনার আগে বিক্রেতার কাছ থেকে বেশি টাকা অগ্রিম দেবেন না।
- জমি রেজিস্ট্রেশনের আগে দলিল এবং অন্যান্য কাগজপত্রের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবেন না।
- জমি রেজিস্ট্রেশনের কাজটি নিজে করবেন না। এজন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।