কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেকে না জানার কারণে লোন গ্রহণ করতে পারছে না। কর্মসংস্থান লোন পদ্ধতি একটু ভিন্ন এবং এটি কয়েকটি শর্ত অনুযায়ী মানুষদেরকে লোন প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশের বেকারত্ব দূর করার জন্য আত্মকর্মসংস্থান তৈরীর লক্ষ্যে বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক অনেকদিন যাবত কাজ করে যাচ্ছেন । বেকারদের বেকারত্ব অভিশাপ থেকে মুক্তি এবং দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র শিল্পী গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন দিয়ে থাকেন । ব্যাংকটি সাধারণত বেকারদের বেকারত্ব দূর করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে থাকেন । আর তাই এই কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে যারা যারা লোন গ্রহণ করতে আগ্রহী এবং যারা লোন গ্রহণ করে নিজের কর্মসংস্থান তৈরিতে আগ্রহী তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট বলা হবে কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ পাওয়ার নিয়ম এবং কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি
এই পোস্টের সার সংক্ষেপ
কর্মসংস্থান ব্যাংক কি
কর্মসংস্থান ব্যাংক হলো বাংলাদেশের একটি ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান । দরিদ্র বিমোচন এ লক্ষ্যে মহিলাদের ঋণ সহায়তা ও বেকার যুবকদের বেকারত্ব দূর করার জন্য আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে সহযোগিতা করার জন্য ১৯৯৮ সালে কর্মসংস্থান ব্যাংক এর যাত্রা শুরু হয় । এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেন এডভোকেট আব্দুল আউয়াল । এবং বর্তমানে এই ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে আছে “ কানিজ ফাতিমা”
ব্যাংকটি যে সকল সেবা সমুহ দিয়ে থাকে: ব্যাংকিং সেবা , কর্পোরেট ব্যাংকিং, বিনিয়োগ ব্যাংকিং, কনজুমার ব্যাংকিং । দারিদ্র ও বেকার মানুষদের উন্নয়নে ১৯৯৮ সালে মাত্র 3 বিলিয়ন টাকা মূলধন নিয়ে এই ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয় । কর্মসংস্থান ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশ দারিদ্র মানুষদের দারিদ্রতা থেকে মুক্তি এবং বেকার যুবকদের বেকারত্ব নামক অভিশাপের হাত থেকে রক্ষা করা । কর্মসংস্থান ব্যাংক মানুষদের ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য টাকা লোন দিয়ে থাকেন ।
আরো জানুনঃ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
কর্মসংস্থান ব্যাংক এর মূল উদ্দেশ্য
যেকোনো একটা প্রতিষ্ঠানের তৈরি করার পিছনে একটি মূল উদ্দেশ্য থেকে থাকে ঠিক তেমনি কর্মসংস্থান ব্যাংক তৈরির পিছনে এর মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের দারিদ্র ও বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে সাহায্য করা । ১৯৯৮ সালে এডভোকেট আব্দুল আউয়াল সাহেবের হাত ধরে এই ব্যাংকটির যাত্রা শুরু হয় । বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের দারিদ্রতা মোচনের জন্য এবং মহিলাদের ঋণ সহায়তার জন্য ও বেকারত্ব নামক অভিশাপ এর হাত থেকে বাংলাদেশের বেকার যুবকদের রক্ষা করার জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক এর যাত্রা শুরু হয় ।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন এর সুবিধা
কর্মসংস্থান ব্যাংক হলো বাংলাদেশের একটি ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের । বেকারত্ব দূরীকরণ ও দারিদ্র্য বিমোচন করতে কৃষিভিত্তিক ও খুদে শিল্পী এবং ব্যবসা খাতে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন দিয়ে থাকেন । এই ই-ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের জনগণের আত্মকর্মসংস্থান তৈরীর জন্য লোন দিয়ে থাকে । বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংকের অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে তারমধ্যে: বেকারদের কোন ধরনের জামানত ছাড়াই সরকারি খাতের বিশেষত্ব ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ দিচ্ছেন ।
কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণের সুদের হার মাত্র ১১ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত । এছাড়াও পুরাতন ব্যবসায়ীরা ক্ষুদে ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা বড় করে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি লক্ষে এদেরকেও বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ দিয়ে থাকেন । এই ব্যাংকের ঋণ কিস্তিতে শোধ করার অপশন আছে । কর্মসংস্থান ব্যাংক 5 লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ 25 লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকেন ।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোনের পরিমাণ
বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণ ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ দিয়ে থাকে। 14 ই জানুয়ারি কর্মসংস্থান ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন । সেখানে বলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু যুব ঋণ নীতিমালা বঙ্গবন্ধু যুব ঋণ কর্মসূচী কর্মসংস্থান ব্যাংকের হাতে নেয়া হয়েছে । 700 কোটি টাকা ঋণ সুবিধা দিয়েছেন এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক । বেকার যুবক ও যুব নারীরা বঙ্গবন্ধু যুব ঋণ নীতিমালার আওতায় 8% সরল সুদে লোন পাবে । এই লোন দেয়া হচ্ছে পাঁচ বছরের জন্য ।
কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে কোন জামানত ছাড়াই ২০ হাজার টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায় । তবে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে বেকার অবস্থায় কোনো সরকারি বা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কাজের প্রশিক্ষণ নিতে হবে ।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি
কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য কিছু খাত আছে যেই খাতগুলোর মধ্যে আপনাকে লোন নিতে হবে । নিচে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
কর্মসংস্থান ব্যাংক এটি সাধারণত দুইটি কর্মসূচিতে পরিচালিত হয় একটি হলো তাদের নিজস্ব কর্মসূচি অন্যটি সরকারের বিশেষ কর্মসূচি
যে সকল খাতে কর্মসংস্থান ব্যাংকের লোন দেয়া হয় উভয় কর্মসূচিতে ।
- খুদে ব্যবসা ঋণ কর্মসূচী
- বিদেশে কর্মসংস্থান ঋণ
- কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে ঋণ
- শিল্প-কারখানায় ঋণ
- শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পে ঋণ প্রদান
- বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য ঋণ প্রদান
- দুগ্ধ উৎপাদন এবং কৃত্রিম প্রজন ন খাতে ঋণ প্রদান
- গৃহ নির্মাণ ঋণ
- কর্মরত শ্রমিকদের ঋণ
- ইত্যাদি ।
কর্মসংস্থান ব্যাংকের নিজস্ব কর্মসূচি এবং বাংলাদেশ সরকার এর বিশেষ কর্মসূচিতে এইসকল খাতে বেকার যুবকদের ও দারিদ্র দের ঋণ প্রদান করা হয় ।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য একজন উদ্দ্যোক্তাকে কর্মসংস্থান ব্যাংকের সমস্ত শর্তাবলী সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ বাবদ নিকটস্থ কর্মসংস্থান ব্যাংক শাখায় উপস্থিত হতে হবে এবং লোনের জন্য আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোক্তার তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করার পরে লোন প্রদান করবে।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হল কর্মসংস্থান ব্যাংক । এটি ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের বেকার যুবক ও দারিদ্র দের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে ঋণ প্রদান করে সহায়তা করে । কর্মসংস্থান ব্যাংকে লোন পাওয়ার উপায় বা শর্ত গুলো হলঃ
- উদ্যোক্তা কে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে । বাংলাদেশের নাগরিক ব্যতীত অন্য কাউকে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন দেওয়া হবে না ।
- স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে । উদ্যোক্তা কে অবশ্যই কর্মসংস্থান ব্যাংকের শাখার অধিক ক্ষেত্রের স্থায়ী বসবাসরত বাসিন্দা হতে হবে অন্যতায় তাকে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে কোন ধরনের লোন দেয়া হবে না।
- উদ্যোক্তা কে অবশ্যই অর্ধ বেকার বা বেকার হতে হবে । কর্মসংস্থান ব্যাংক বেকার ব্যতীত অন্য কাউকে ঋণ প্রদান করেনা ।
- উদ্যোক্তার বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে হতে হবে । তবে যারা পূর্বে ঋণ গ্রহণ করেছেন তারা বয়সের দিক থেকে বয়স সীমা শিথিলযোগ্য হবে ।
- প্রকল্প পরিচালনা উপরে যেকোনো সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে হবে । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর , সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, বিসিক, ইত্যাদি এ সকল প্রতিষ্ঠান থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে হবে প্রকল্প পরিচালনা এর উপরে ।
- পূর্ববর্তী ঋণ প্রতিশোধ এবং ঋণ ব্যবহারের যোগ্যতাসহ প্রতিশোধের ক্ষমতা এবং সুনামের অধিকারী হতে হবে । আপনি বলবে সঠিকভাবে ঋণ পরিশোধ করেছেন এমন সুনাম থাকতে হবে অন্যথায় আপনি ঋণ পাবেন না ।
- যদি কোনো সরকারি অথবা বেসরকারি আর্থিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণখেলাপি এর অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে আপনি কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য বলে গণ্য হবেন না ।
- এবং ঋণ আদান-প্রদানের নিয়ম-নীতিমালা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে ।
- ঋণ নেয়ার জন্য অবশ্যিই একজন গ্যরান্টার থাকতে হইবে অর্থাৎ একজন জামিনদার দেখাতে হবে, আপনি ঋণ পরিশোধ এ ব্যারথ হলে তাকে আপনার ঋণ পরিশোধ করে দিতে হবে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
কর্মসংস্থান ব্যাংকের লোন পেতে হলে আপনাকে যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে । এবং ভিন্ন ভিন্ন খাতে ভিন্ন ভিন্ন কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে তবে প্রাইমারি ভাবে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো হল ।
- ফরম সংগ্রহ করা ( ঋণ আবেদনের জন্য)
- আবেদনকারী পাসপোর্ট সাইজের সদ্যতোলা দুই কপি সত্যায়িত ছবি
- গ্যারান্টি হিসেবে নির্বাচিত ব্যক্তির সদ্যতোলা দুই কপি সত্যায়িত ছবি
- আবেদনকারী স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র ( দলিলের ফটোকপি এবং ইউপি চেয়ারম্যান অথবা নেওয়ার এর কাছ থেকে নেয়া নাগরিক সনদপত্র)
- ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি ( লোন যদি এক লক্ষ টাকার উপরে হয় )
- এবং আপনি যদি ওষুধের দোকান দিয়ে থাকে তাহলে এক্ষেত্রে আপনার ড্রাগ লাইসেন্স এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র প্রাইমারি ভাবে সকল ধরনের লোনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন । এছাড়াও হাত বেধে এবং টাকার পরিমান নির্ভর করে আরো কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে । সেটা আপনি কর্মসংস্থান ব্যাংকের কর্মরত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন ।
I need some money