ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি ২০২২
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি ২০২২ শুরু হয়েছে । ২০১৯ সালে সর্বশেষ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয় বাড়ি বাড়ি গিয়ে। তখন যারা বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে ভোটার তালিকায় তাদের নাম উল্লেখ করাতে পারেননি অথবা ভোটার তালিকার ফরম পূরণ করতে পারেননি নতুবা বয়স না হওয়ার কারণে যারা ভোটার নিবন্ধন তো হতে পারেননি তারা এই বছরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি তে নিবন্ধিত হতে পারবেন।
করোণা মহামারীর কারণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি গত দুই বছর যাবত বন্ধ ছিল। ২০ ই মে ২০২২ থেকে আবারো শুরু হয়েছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি টি চারটি ধাপে শেষ হবে। এই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার নিবন্ধন এবং মৃত ভোটারদের নাম বাতিল করা হবে। প্রথম ধাপে প্রায় ১৩৯ টি উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চালু হয়েছে ।প্রথম ধাপের ভোটার তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে ৯ জুন পর্যন্ত। ১০ ই জুন থেকে শুরু হবে ভোটার তালিকা অনলাইন নিবন্ধন। জুলাই মাসের ২১ তারিখে নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হবে।
প্রথম ধাপে যে সমস্ত জেলায় উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলবে তার তালিকা দেখুন এই লিংকে ক্লিক করে
আপনি যদি পূর্বে ভোটার নিবন্ধিত না হয়ে থাকেন তাহলে উক্ত কার্যক্রমে আপনি কি বন্ধ হতে পারবেন। নতুন ভোটার হতে আপনার কি কি প্রয়োজন হবে, কি কি কাজ করতে হবে, ছবি কবে তুলবেন, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন কবে দেবেন ইত্যাদি আজকের এই পোস্টে জানানোর চেষ্টা করব।
এই পোস্টের সার সংক্ষেপ
কারা ভোটার নিবন্ধন হতে পারবেন?
- যারা পূর্বে ভোটার নিবন্ধিত হয়নি
- যাদের জন্ম ২০০৭ সালে বা তার পূর্বে।
উল্লেখ্য একাধিকবার ভোটার নিবন্ধিত হওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই যারা পূর্বে একবার ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেছেন তারা দ্বিতীয়বার ভোটার রেজিস্টার করার চেষ্টা করবেন না। আপনার যদি ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে যায় তাহলে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
ভোটার হতে কি কি লাগে
আপনি যদি পূর্বে ভোটার নিবন্ধন তো না হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে ভোটার নিবন্ধন তো হওয়ার জন্য যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দরকার পড়বে তা নিচে দেওয়া হল
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ এর ফটোকপি ( পিইসি, জেএসসি , এসএসসি, এইস,এসসি যদি থাকে)
- পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- বিবাহিত হলে স্বামী/স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- প্রবাসী হলে পাসপোর্ট এর ফটোকপি
- বিদ্যুৎ বিল/ টিন সার্টিফিকেট এর সনদ ফটোকপি
- রক্তের গ্রুপের সনদ ( অপশনাল )
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি যখন বাড়ি বাড়ি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে লোকজন আসবে তখন উক্ত ডকুমেন্ট এর সাথে আপনাকে একটি ফরম পূরণ করতে হবে সেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য উল্লেখ করতে হবে এবং আপনার স্বাক্ষর দিতে হবে। তখন সেই ফরম এর একটি অংশ আপনাকে কেটে দেওয়া হবে পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই এবং ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করার জন্য। এই ফরমের অংশটিকে বলা হয় ভোটার স্লিপ। এটি দিয়ে খুব সহজেই অনলাইন থেকে আপনার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন যখন আপনার ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। অবশ্য ওই ফরম পূরণ করার পরে আপনাকে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে গিয়ে স্বাক্ষর দিতে হবে এবং ১০ আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি এবং ছবি তুলে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড আমাদের জন্য অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। আপনি যদি যথাসময়ে ভোটার নিবন্ধন না করে থাকেন তাহলে ভবিষ্যতে আপনি অনেক ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। যেমন অফিশিয়াল কোন কাজ কর্মের জন্য ভোটার আইডি কার্ড আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট হয়ে ওঠে। তাই সঠিক সময়ে আপনি যদি ১৮ বছরের উর্ধ্বে হয়ে থাকেন তাহলে আপনার অবশ্যই ভোটার তালিকা নাম দেওয়া উচিত । অথবা আপনি যদি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচিতে নিবন্ধিত হতে না পারেন তাহলে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নিবন্ধন করতে পারবেন।
ভোটার তালিকা কবে প্রকাশ করা হবে
সাধারণভাবে ভোটার তালিকা নিবন্ধিত হওয়ার ছয় মাস পরে অর্থাৎ বলতে গেলে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম হওয়ার পরবর্তী বছরের জানুয়ারি মাসে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন। তবে যারা এই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন বা ভোটার নিবন্ধন হবেন প্রত্যেকের ভোটার নিবন্ধন তালিকা একটি সময়ে প্রকাশ পাবে না। দেখে নিন কাদের ভোটের তালিকা কখন প্রকাশিত হবে।
- যাদের জন্ম ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, তাদের ভোটার ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০২৩ সালের ২ মার্চ৷
- যাদের জন্ম ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, তাদের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০২৪ সালের ২ মার্চ৷
- যাদের জন্ম ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, তাদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা করা হবে ২০২৫ সালের ২ মার্চ৷
কিভাবে বুঝবেন আপনার ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে কিনা
যখন আপনার বয়স অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে তখন আপনার হাতে থাকা একটি ভোটার স্লিপ নাম্বার দিয়ে আপনি খুব সহজেই এসএমএসের মাধ্যমে আপনার ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার এবং আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন। অবশ্য এর জন্য আপনাকে কোন ফি প্রদান করতে হবে না। এই পোস্ট থেকে পড়ে আসতে পারেন কিভাবে ভোটার তথ্য যাচাই এবং ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হয়
ভোটার আইডি কার্ড কবে পাবো
যারা বর্তমানে ভোটার আইডি কার্ড নতুনভাবে নিবন্ধিত হবেন তারা প্রত্যেকেই স্মার্ট আইডি কার্ড পাবেন। যদিও আপনারা ভোটার তালিকা প্রকাশ করার সাথে সাথে অনলাইন থেকে আপনাদের আইডি কার্ড টি ডাউনলোড করতে পারবেন তবে অনেকটা সময় দেরি হবে আপনারা স্মার্ট আইডি কার্ড হাতে পেতে। এই সময়ে আপনি খুব সহজেই আপনার স্মার্ট কার্ড স্ট্যাটাস জানতে পারবেন অনলাইন থেকেই। এই পোস্ট থেকে জানুন স্মার্ট কার্ড চেক করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া।