বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম। কন্টেন্ট লেখার সেরা উপায়
এই ব্যাপার খুবিই বাহুল্যা যে, একজন নতুন ব্লগার এর জন্য সবচেয়ে প্রথম দিকের কষ্টসাধ্য জিনিস আর্টিকেল রাইটিং -(Article Writing)। নিজের ব্লগ বা অন্যান্য জায়গায় গেস্ট ব্লগিং করার জন্য হলেও আর্টিকেল লেখাটা বাধ্যতামূলক আর যারা বাংলায় ব্লগিং করেন তাদের নিজস্ব ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও কোন বাংলায় আর্টিকেল লিখতে গেলে তাদের মাথায় কিছু কাজ করে না, ইংরেজি আর্টিকেল বাদ দিয়ে যদি বাংলায় আর্টিকেল- Article লিখতে চান তবে শুধু কম পরিশ্রমে করতে পারলেও অনেক ক্ষেত্রে একেবারে সহজ নয়। প্রতিনিয়ত যারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে ও লেখালেখি করে তাদের ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের আর্টিকেল লেখা – Article Writing একদম সহজ। আর যারা ইংরেজিতে দক্ষ তাদের জন্য ইংরেজি আর্টিকেল লেখা আরো সহজ। তবে অনেকেই তো নতুন আর ব্লগ গুলোও নতুন। তো ব্লগটিকে গুগলে র্যাংক করার জন্য দরকার প্রচুর এসইও (S E O Article) মানের আর্টিকেল। এ ক্ষেত্রে নতুন ব্লগারদের যেমন আর্টিকেল লেখার বিষয়বস্তু খুঁজে পাওয়া মুশকিল তেমনি আর্টিকেল লেখাটাও মুশকিল। তবে আজকের এই পোস্টে বাংলা কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় সম্পর্কে কিছু টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করবো যেগুলো সম্পূর্ন পড়লে খুব সহজেই আপনি বাংলায় কনটেন্ট রাইটিং বা বাংলা আর্টিকেল রাইটিং করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ বাংলায় ব্লগ লিখে হাজার হাজার ডলার আয় করার উপায়</a >
এই পোস্টের সার সংক্ষেপ
কন্টেন্ট রাইটিং কি?
কন্টেন্ট তৈরি এর অন্যতম প্রক্রিয়া হলো আর্টিকেল রাইটিং – Article Writing। কন্টেন্ট হতে পারে কোন ছবি,লেখা,ভিডিও, অডিও ইত্যাদি। তো কন্টেন্ট রাইটিং বলতে আমরা সাধারনভাবে আর্টিকেল রাইটিং কে বুঝি। বাংলায় কোন কিছু লিখে ব্লগে প্রকাশ করাকে বাংলা আর্টিকেল রাইটিং বা বাংলা কন্টেন্ট রাইটিং বোঝায়।
আর্টিকেল লেখার বিষয়
আর্টিকেল লেখার প্রথম শর্ত হলো বিষয়বস্তু নির্ধারণ। আপনি ঠিক কোন বিষয়টি আপনার আর্টিকেলে প্রকাশ করতে যাচ্ছেন বা লিখতে চাচ্ছেন বা ছোটখাটো বিষয় পূর্ণাঙ্গ সমাধান প্রকাশ করে যাচ্ছেন, সেই বিষয়টি আগে নির্ধারণ করুন। আপনি যদি কনটেন্ট রাইটিং আইডি খুজে না পান তাহলে বিভিন্ন ভাবে গুগল সার্চ থেকে আপনার নিশ রিলেটেড কোয়ারি খুজে বের করুন। প্রথমত যে বিষয়টি নিয়ে লিখবেন সেই বিষয়টি নিয়ে পরিপূর্ণ ধারনা নিন। সম্পুর্ন রুপে তার বহিপ্রকাশ ঘটান।
আর্টিকেল বা কন্টেন্ট রাইটিং বিষয় অনেক প্রকার হতে পারে যেমন
- এসইও কন্টেন্ট রাইটিং
- এফিলিয়েট কন্টেন্ট রাইটিং
- ব্লগ কন্টেন্ট রাইটিং
- ই-বুক রাইটিং
- ম্যাগাজিন কন্টেন্ট রাইটিং
- নিউজ কন্টেন্ট রাইটিং
- একাডেমিক কন্টেন্ট রাইটিং
- ট্রান্সলেশন
- প্রোডাক্ট রিভিউ রাইটিং
- শর্ট স্টোরি মেকিং
সুন্দর আর্টিকেল টাইটেল ব্যবহার
একটি আর্টিকেলের ভিতরের দিকটাতে কি রয়েছে তা শুরু দিকেই প্রকাশিত পায় একটা সুন্দর টাইটেল এর ভিতর। একটা আর্টিকেল টাইটেল যতটা আকর্ষনীয় হবে, পাঠকদের দৃষ্টি ততটা আকর্ষিত হবে। ধরুন আপনি অনলাইন আয় সমন্ধে একটি আর্টিকেল লিখভেন, এখানে অবশ্যই এমন একটি দৃষ্টান্তমুলক টাইটেল রাখবেন যাতে ভিজিটর গন সহযেই উপলব্ধি করতে পারে, যেমন প্রতিদিন ১০০ টাকা আয় করার উপায়/ অথবা / কিভাবে অনলাইনে প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় করবেন? । এখন এই যে কৌতুলহি প্রশ্নের টাইটেল গুলো৷ এগুলা ইউজারদের মনে সারা ফেলে দিবে এবং তারা পড়ার প্রতি আগ্র বাড়াবে। তাই সুন্দর আর্টিকেল তৈরি করতে সুন্দর টাইটেল ব্যাবহার করুন
সারাংশ উল্লেখ
আপনার নির্ধারিত টপিক কে কেন্দ্র করে আর্টিকেল লেখার শুরুতেই 100 থেকে 200 ওয়ার্ড শব্দের ভেতর ছোট সারাংশ বা প্যারাগ্রাফ লিখুন, যেখানে আপনার মুল টপিকের কিওয়ার্ড থাকবে এবং আপনার আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পাঠকরা পেয়ে যাবে। আপনি সম্পূর্ণ ভাবে আর্টিকেলের যে বিষয়টি উল্লেখ করবেন তার ছোট একটি সারাংশ পড়লে সহজেই পাঠকরা বুঝতে পারবেন আপনি আসলে কোন পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি বোঝাতে চেয়েছেন
সূচিপত্র বিন্যাসঃ
মুল টপিককে কয়েকটি বিষয় বস্তু দিয়ে ভাগ করুন। আপনার কনটেন্ট বা টপিকের সাথে রিলেটেড সমস্ত প্রশ্ন গুলো খুজে বের করুন, এবং প্রত্যেকটা প্রশ্নের আলাদা আলাদা মার্ক করে হেডিং <H2> দিন এবং তার ব্যাখ্যা বা উত্তর প্রদান করুন সাবহেডিং করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে
- ফেইসবুক কী?
- ফেইসবুক থেকে টাকা আয় করার উপায়
- ফেইসবুক একাউন্ট খোলার নিয়ম
- ফেইসবুক প্রোফাইল লক করার নিয়ম
ইত্যাদি। এখানে প্রত্যেকটা মুল মুল প্রশ্নকে সাবহেডিং <H2> আকারে প্রকাশ করুন ব্লগ পোস্ট করার সময়। এবং এর উত্তর গুলো প্যারাগ্রাফ বা সাবহেডিং ই থাকবে।
আর্টিকেল লেখার উপায় / কন্টেন্ট লেখার উপায়
এইখানে আমি যা উল্লেখ করেছি তা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে। বলে রাখা ভালো আপনাকে প্রচুর ধৈর্য নিয়ে কায করতে হবে। সর্ব প্রথমে আপনার দরকার পোড়বে একটি খাতা কলম।আপনি আপনার মূল টপিক সম্পর্কে যা বিস্তারিত লিখতে চান তা আগে একটি সাদা খাতায় লিখে রাখুন। বাংলা আর্টিকেল সব সময় প্রমিত ভাষায় লেখার চেস্টা করবেন এরপর সে গুলোকে কারেকশন করুন। কোথাও কোনো তথ্য বাদ পড়ে থাকলে পরিপূর্ণ করুন ভুলটা সংশোধন করুন। এরপরে আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ব্লগিং করে থাকেন তাহলে খুব ভালো হবে গুগল ভয়েস টাইপ করে, আর যদি আপনার ধৈর্য থাকে তাহলে দীর্ঘ সময় নিয়ে সম্পূর্ণ বাংলা আর্টিকেল মোবাইলে টাইপ করুন অথবা কম্পিউটারে টাইপ করুন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি এবার আপনি আপনার একটি নোটপ্যাড এ সেভ করে রাখুন মোবাইলে বা কম্পিউটারে। এর পরে সেটির কপি এবং পেস্ট করুন যখন আপনি ব্লগ পোস্ট করবেন। কি করলে আপনার আর্টিকেলটি সুন্দর দেখতে হবে?
একটি সুন্দর ও আদর্শ কন্টেন্টের শর্ত হলো
- সম্পূর্ণ ইউনিক আর্টিকেল লেখা
- নির্ভুল আর্টিকেল লেখা
- হেডিং ও সাব হেডিং ব্যাবহার করা
- সুসজ্জিত আর্টিকেল তৈরি
- সারিবদ্ধ আর্টিকেল সাজানো
- বিভিন্ন লেখা সমুহকে লিস্টে প্রকাশ করা৷ অর্থাৎ বুলেট পয়েন্ট ব্যাবহার করা
যেমনঃ
- চাল
- ডাল
- চিনি
- বাংলা আর্টিকেল রাইটিং
- কন্টেন্ট রাইটিং
- ব্লগিং, ইত্যাদি
আপনি যেই টপিক নিয়ে লিখতে যাচ্ছেন সেই টপিকের নির্ভরযোগ্যতা কতটুকু সেটা আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে। পাঠকরা আপনার লেখা পড়লে কোন কিছু যেন বুঝতে পারে এমন ভাবে আপনার আর্টিকেলটি রেডি করুন৷ প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের সময় বিভিন্ন রেফারেন্স উল্লেখ করুন৷ টপিক সম্পর্কে কিছু না জেনে থাকেন তাহলে বিভিন্ন সোর্স থেকে জেনে নিবেন। সবচেয়ে ভালো হবে বইপড়া এক্ষেত্রে হতে পারে ই-বুক। অন্যাথায় ইউটিউব বা গুগল।
নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকুন এরপর আপনার যতটুকু দরকার সেটুকু তথ্য সংগ্রহ করে লেখাগুলোকে পুনর্বিন্যাস করুন। তবে কোন সোর্স থেকে লেখা হুবহু কপি করা যাবেনা। আর্টিকেলটি নিজের মত করে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখুন। দরকার পড়লে আপনার টপিক এর ইংরেজি ভাষার ব্লগ গুলো কপি করে গুগল ট্রান্সলেশন এর সাহায্যে অনুবাদ করে সেগুলো পুনর্বিন্যাস’ করে এডিটিং করুন। এভাবে কিন্তু সহজে বাংলায় অনেক আর্টিকেল রাইটিং অথবা বাংলা কন্টেন্ট রাইটিং করতে পারবেন।
আর্টিকেল লিখে কত টাকা আয় করা যায়?
বাংলা এই পর্যন্ত অসংখ্য ব্লগসাইট রয়েছে যেগুলো অন্য ভাষার ব্লগ এর তুলনায় কম। একজন ভাল কনটেন্ট রাইটার হতে পারলে আপনি অনেক টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। সেটা হোক নিজের ব্লগে পোস্ট করে অথবা গেস্ট ব্লগিং করে
আর বর্তমানে বাংলা কনটের প্রচুর চাহিদা রয়েছে যার কারণে আপনি সহজে বাংলা কন্টেন্ট রাইটিং জব পেয়ে যাবেন
মার্কেটে বর্তমানে অনেক বাংলা কন্টেন্ট লিখে আয় করার সাইট -( Article writing site) রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারবেন। এতে দেখা যায় প্রতিটা 1000 ওয়ার্ড বাংলা আর্টিকেল লেখা বাবদ 400 টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। প্রতিদিন চাইলে চার থেকে পাঁচটা আর্টিকেল লেখা সম্ভব।
এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং করেও আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারবেন।
আজকের পোস্ট থেকে আমরা কি শিখলামঃ
বাংলায় আর্টিকেল লেখার বিষয়বস্তু ও আর্টিকেল লেখার উপায় সমুহকে। এই অল্প ব্যাখা হয়তো আপনাকে অনেক বড় লেভেলের রাইটার করিয়ে দিবে না৷ তবে কিছুটা সাহায্য করবে ব্যাসিক রাইটিং করার জন্য৷ নিয়মিত লেখালেখির প্রাকটিস করুন, নিয়মিত ব্লগ পোস্ট করতে থাকুন।আরো আরো বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন৷ তাহলে আপনার কেন বিষয়ে আর্টিকেল লিখতে কোথাও কিছু খুজতে হবে না। এব মোটামুটি একটি ভালো পরিমানের টাকাও আয় করতে পারবেন। ভালো লাগলে পোস্ট টি শেয়ার করুন।